ভাগ্যগুণে বেঁচে গেলেন ছেলে বাবা অঙ্গার
প্রকাশিত : ১৭:৫৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৮:০৬, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
চকবাজার চুড়িহাট্টা মোড়ের মাদিনা ডেকোরেটর। প্রতিদিনের মতো চলছে কাজ। সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। দোকানের মালিক শামছুল আলম তার ছেলে মাহবুব হোসেনকে বাসা থেকে ডেকোরেটর এর কাপড় আনতে পাঠান। ছেলে কাপড় নিয়ে ফিরলে বাবা আবার তাকে সাদার পরিবর্তে রঙিন কাপড়গুলো নিয়ে আসতে বলেন। মাহবুব কাপড় নিয়ে ফিরতেই হঠাৎ আওয়াজ শুনে কাপড় ফেলে সামনের দিকে এগুতে থাকেন। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখায় সে আর দোকান পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। এবার শুরু হয় তার অপেক্ষার পালা...
এমন বর্ণনা দিচ্ছিলেন দোকানের কর্মচারি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, আমি চা আনতে গিয়েছিলাম। মাহবুব ভাই কাপড় আনতে গেল। এর মাঝেই আগুন লাগে। এরপর আমরা দুজন রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে চট পট করতে থাকি। সামনে যেতে পারছিলাম না। একটু পর পর দেখি আগুন শুধু বাড়ছে। মালিকের খোঁজ কোনোভাবেই নিতে পারিনি। এভাবে সারারাত ওখানে গলির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকি। ভোর বেলা শাহি মসজিদের দিক থেকে সামনে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তারা আমাদের কাছেই যেতে দেয় না। অনেক কাকুতি মিনতি করেও দোকানের কাছে যেতে পারি নাই।
চোখ মুছতে মুছতে হারুন বলেন, ভাগ্যগুনে আমরা বেঁচে গেছি। সারারাত অপেক্ষা করে সকাল ৬টার দিকে দেখি দোকান থেকে ৭টি লাশ বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন বুঝতে পারলাম মালিক আর নেই। পায়ে তখন আর শক্তি পাই না। এরপরও মেডিকেলের দিকে দৌড়াতে থাকি। তারপর আবার অপেক্ষা শুরু হয়। লাশ শনাক্ত করতে পারছি না। মালিকের ছেলে মাহবুব আর আমি মেডিকেলে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে থাকি। বুধবার আগুন লাগে পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আমরা লাশ শনাক্ত করতে পারি।
এভাবে এক দোকানেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৭টি তাজা প্রাণ। বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে আগুন লাগে চকবাজার চুড়িহাট্টা মোড়ে। একটি পিক আপ ভ্যান থেকে গ্যাস লিক হয়ে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তারপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৭০ জন আগুনে পুড়ে মারা যায় ও ৪১ জন আহত হন।
এসি
আরও পড়ুন